বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:গালোয়ান উপত্যকায় চিনা হামলার প্রতিবাদে জ্যোমাটোর চাকরিই ছেড়ে দিলেন শতাধিক কর্মী। শুধু তাই নয়, সংস্থা চিনা বিনিয়োগের প্রতিবাদে নিজেদের কোম্পানির লোগো লাগানো টি–শার্টও তাঁরা পুড়িয়ে দিলেন। পাশাপাশি তাঁরা এ কথাও জানিয়ে দিলেন, চিনা সংস্থার শেয়ার রয়েছে, এমন কোনও কোম্পানিতে তাঁরা চাকরি করবেন না। গালোয়ানে নিহত ২০ জন ভারতীয় সেনার প্রতি এ ভাবেই তাঁরা বেহালায় নিজেদের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করলেন।
উল্লেখ্য, জোম্যাটোতে চিনের একটি সংস্থার ২৭ শতাংশ লগ্নি রয়েছে। যার বাজারমূল্য ২১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেইজন্যই কলকাতার বেহালায় ওই সংস্থার প্রতি অনাস্থা জানালেন শহরের শতাধিক কর্মী। প্রতিবাদীদের তরফে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমরা আগে জানতাম না এই সংস্থায় চিনের কোনও কোম্পানির বিনিয়োগ রয়েছে। গালোয়ানে চিনের সেনারা হামলা চালানোর পরই বিষয়টি জানতে পারি। তার পরই আমরা চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই।’ তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘যে চিনের সেনাবাহিনী অন্যায় ভাবে আমাদের দেশে আগ্রাসন চালাতে চায়, তাদের সহযোগিতা আমরা চাই না। আমাদের ঘাম–রক্ত ঝরিয়ে টাকা তুলে দেব আমাদের সংস্থাকে, আর বিনিয়োগ করেছে বলে সেখান থেকে নিজেদের অংশ নিয়ে যাবে চিনের কোম্পানি, তার পর সেই টাকা খরচ করে সেনাবাহিনীকে দিয়ে আমাদের জওয়ানদের ওপর হামলা চালাবে, তা আমরা মেনে নিতে পারব না।’
তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন, বেশ কয়েকদিন ধরে তাঁরা ফোন করে নিজেদের আইডি ব্লক করাচ্ছিলেন। কিন্তু কোম্পানি জেনে যাওয়ায় সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এখন নিজেদের মোবাইল থেকে সরাসরি তাদের অ্যাপ আনইনস্টল করে দিচ্ছেন। ফলে কোনও নির্দেশ তাঁদের কাছে আর এসে পৌঁছচ্ছে না। তবে, জোম্যাটো যদি চিনা কোম্পানির সঙ্গ ছাড়ে, তা হলে তাঁরা ফের চাকরিতে ফিরতে পারেন। যদি জোম্যাটে নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকে, তা হলেও তাঁদের অসুবিধে নেই। শাশ্বত বলেই দিলেন, ‘আমাদের সেনাদের রক্তমাখা ভাত আমরা খেতে পারব না। জোম্যাটো আমাদের কথা না শুনলে কোনও পরোয়া নেই। আমাদের জীবন ও জীবিকা আমরা নতুন করে ঠিক করে নেব।’ প্রসঙ্গত, চিন–ভারত তপ্ত সম্পর্কের মাঝেই জোম্যাটো–সহ বেশ কিছু সংস্থায় চিনা লগ্নির খবর আসার পরই সেই সংস্থাগুলির ব্যবসা সারা দেশেই অস্বাভাবিক হারে পড়তে শুরু করেছে। আগে সারা দিন ধরে শহরবাসীর কাছ থেকে যে অর্ডার জোম্যাটো পেত, এখন সেই হার অনেকটাই পড়ে গিয়েছে।